জেরুজালেমের ইতিহাস, দাউদের বিশ্ব, পর্ব এক. The History of jerusalem.

জেরুজালেমের ইতিহাস।  

দাউদের বিশ্ব 
পর্ব ০১ 

জেরুজালেমের ইতিহাস, দাউদের বিশ্ব, পর্ব এক. The History of jerusalem.


জেরুজালেমের ইতিহাস মানে গোটা পৃথিবির ইতিহাস,  বেনিয়ামিন ডিসরাইলি বলেছিলেন - জেরুজালেমের প্রতি দৃষ্টিপাত মানে বিশ্বের ইতিহাস পড়া; বরং তারচেয়ে বেশি; এটা স্বর্গ ও পৃথিবীর ইতিহাস।  

সুর ইবনে ইয়াজিদ বলেছিলেন - পৃথিবীর পবিত্র স্থান হলো সিরিয়া; সিরিয়ার পবিত্র স্থান হলো ফিলিস্তিন; ফিলিস্তিনের পবিত্র স্থান হলো জেরুজালেম; জেরুজালেমের পবিত্র স্থান হলো মাউন্ট; মাউন্টের পবিত্র স্থান হলো নামাজের স্থান; নামাজের পবিত্র স্থান হলো ডোম অব দ্য রক। 

সর্বোপরি বিশ্বের সর্বাধিক আলোচিত শহরের নাম হলো জেরুজালেম,  জেরুজালেম নিয়ে অসংখ্য বই লিখেছেন ঐতিহাসিক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ।  আমি বিগত দশ বছর যাবত জেরুজালেমের ইতিহাস নিয়ে পড়াশোনা করছি, জেরুজালেম নিয়ে লিখিত বিখ্যাত বইগুলি সংগ্রহ করছি ও পড়ছি।  ফল স্বরূপ জেরুজালেমের ইতিহাস নিয়ে লিখা শুরু করলাম।  অসংখ্য নির্ভরযোগ্য  ঐতিহাসিক বইগুলি থেকে জেরুজালেমের আসল ইতিহাস ও চিত্র তোলে ধরার চেষ্টা করবো। 


অতীতে বিশ্বব্যাপী জেরুজালেমকে গোটা বিশ্বের কেদ্র মনে করা হতো। কথাটি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান সময়ে অনেক বেশি সত্য প্রমাণিত।  নগরীটি ধর্মগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দু, এই বিষয়টি নতুন নয়,  নগরীটি খ্রিষ্টান, ইহুদি ও মুসলমানদের কাছে ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় তীর্থকেন্দ্র।  সংঘাতে জড়িত সভ্যতাগুলোর কৌশলগত রণভূমি আর এই সংঘর্ষ বর্তমান সময়ে আরো বেশি সোচ্চার হয়েছে মুসলমানদ ও ইহুদিদের কাছে। রমরমা খবরের জন্য বিশ্বের মিডিয়াগুলোর ক্যামেরার সামনে হয়ে উঠেছে একটি আলোকোজ্জ্বল মঞ্চ। ইন্দ্রিয়বিলাসী ষরযন্ত্রবাদ ও ইন্টারনেট রূপকল্পের উপাদান।  সেকুল্যার মুগ্ধতা আকর্ষণকারী; নাস্তিক ও আস্তিকদের মধ্যকার যুদ্ধরেখা। 

শুধু তাই নয়; ধর্মীয় স্বার্থ, রাজনৈতিক স্বার্থ, ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া স্বার্থ অতীতের চেয়ে নগরীটিকে আরো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে খতিয়ে দেখতে একে অন্যদের জুগিয়ে চলছে রসদ। 

জেরুজালেম পবিত্র নগরী, বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর অবাদ পদচারণায় মুখরিত এ নগরীটি সবাই মনে করে নগরীটি কেবল তাদের।  সবাই নিজেদের মনে করাই হলো যোগ যোগ ধরে এসব সংঘর্ষের মূল কারণ।  যোগে যোগে রাজা বাদশাহদের কাছে নগরীটি আকাঙ্ক্ষা আর মূল্যবান উপহার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।  


বহু নামের এ নগরীর প্রতিটি ঐতিহ্য এতটাই সাম্প্রদায়িক যে,  একটি অপরটিকে সামান্যতম ছাড় দিতে রাজি হয়নি কখনো। শহরের পবিত্রতা বর্ণনায় ইহুদিদের পবিত্র সাহিত্যে একে বর্ণনা করা হয়েছে বিভিন্ন নারীবাচক শব্দে - চির সুন্দর, প্রাণোচ্ছ্বল রমণী,  ইন্দ্রিয় পরবশ। কিন্তু নির্লজ্জ বারবনিতা, কখনো সেই ভগ্নহৃদয় রাজকুমারীর মতো প্রেমিক যাকে ফেলে গিয়েছে।  

মোটকথা - জেরুজালেম এক ইশ্বরের আবাস, তিন ধর্মের উপাসনালয়, দুই জাতির রাজধানী।  


জেরুজালেম এর ইতিহাস পুরোপুরিভাবে বুঝতে হলে আমাদের কেনান সম্প্রদায়ের প্রথম বাদশাহ  "দাউদের বিশ্ব" থেকে শুরু করতে হবে। 


দাউদের বিশ্ব 
কেনান সম্প্রদায়ের প্রথম বাদশাহ। 


দাউদ David জায়নের নগরদুর্গ দখল করার সময়ে জেরুজালেম প্রাচীন হয়ে পড়েছিল।  তবে তখন এটা  ঠিক নগরী নয়,  বরং বলা যায় ছোট্ট এক পাহাড়ি ঘাঁটি ছিল। এর অবস্থান এমন এক দেশে যাকে মানুষ চিনেছে বহু নামে যেমন- জুদাই, জুদাহ, ইসরাইল,  কেনান, প্যালেস্টাইন খ্রিষ্টানদের কাছে পূণ্যভূমি, ইহুদিদের কাছে প্রতিশ্রুত ভূমি। ভূখণ্ডটি লম্বায় ১৫০ এবং পাশে ১০০ মাইল।  ভূমধ্য সাগর ও জর্ডান নদীর দক্ষিণ-পূর্ব কোণে এর অবস্থান 

যৌক্তিকভাবে প্রমাণযোগ্য ইতিহাসের এমন যেকোনো তথ্যের চেহে David's city এর রোমাঞ্চকর ভাবমূর্তি অনেক অনেক বেশি উজ্জ্বল।  

জেরুজালেমের আদি ইতিহাসের উপর জমে থাকা কুয়াশার মাঝে মৃৎ  শিল্পের টুকরা, পাথর কেটে গড়া ভুতুড়ে চেহারার সমাধি, দেয়ালের অংশ, আদি নৃপতিদের রাজপ্রাসাদে উৎকীর্ণ লিপি এবং বাইবেলের পূন্যসাহিত্য কেবল অমুচনীয় অস্পষ্টতার মধ্য দিয়ে শত শত বছর আগের মানব জীবনের এক ঝলক দীপ্তি প্রকাশ করতে পারে।  ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রমাণগুলো বিলীন হয়ে যাওয়া একটি সভ্যতার কিছু এলোমেলো মুহূর্তের ওপর কেবল মিটমিটে আলোই নিক্ষেপ করতে পারে। 

শত শত মানুষ কেমন জীবন কাটিয়েছেন সে সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতে পারি না-  যতক্ষণ পর্যন্ত না আরেকটি  প্রতিচ্ছবিকে উদ্ভাসিত করেছে অন্য কোন স্ফুলিঙ্গ। 

শুধু ঝর্ণা, পর্বত আর উপত্যকাগুলো একই রয়ে গেছে।  ঝর্ণারও গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে জলবায়ুর আশীর্বাদে, মানুষের চেষ্টায় পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা হতে পারে নতুন কিছু, যুক্ত হতে পারে নতুন কোন ধ্বংসাবশেষ।  এর অনেকগুলোই অথবা কিছুটা হয়তো সুনিশ্চিত: বাদশা দাউদের আগেই পবিত্রতা নিরাপত্তা এবং প্রকৃতি মিলে জেরুজালেমকে একটি প্রাচীন সুরক্ষিত আশ্রয়ে পরিণত করেছিল, যাকে মনে করা হতো অজেয়। 

খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ বছর আগেও এখানে মানুষের বাস ছিল।  ব্রোঞ্জ যুগের শুরুতে খ্রিস্টপূর্ব ৩২০০ সালের দিকে,  প্রথম নগরী উরুক,  যা এখন ইরাক,  সেটা ছিল ৪০  হাজার মানুষের শহর।  কাছাকাছি জেরিকো ছিল একটি দুর্ভেদ্য শহর।  সে সময় মানুষ জেরুজালেম পাহাড়ের সমাধি নির্মাণ করে মৃতদের কবর দিত। সম্ভবত এটা ছিল ঝর্ণার ওপর দিকের পাহাড়ে একটি প্রাচীরঘেরা গ্রাম। এরপর বহু বছর এই গ্রামটি ছিল পরিত্যক্ত। 

মিশরে ফারাওদের সাম্রাজ্য যখন পিরামিডের নির্মাণ শৈলিতে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে এবং গ্রেট স্ফিংস সম্পূর্ন করে, তখন জেরুজালেমের অস্তিত্ব ছিল ন্যূনতম পর্যায়ে। খ্রিস্টপূর্ব ১৯০০ সালের দিকে ক্রিটে যখন মিনওয়ান সভ্যতার বিকাশ ঘটে, যখন বেবিলনের রাজা হাম্মুরাবি তার আইনগুলো সংকলনের উদ্যোগ নেন;

বৃটেনের মানুষ যখন স্টোনহেঞ্জে উপাসনা করত, মিশরের লুকসর থেকে উদ্ধার করা সে আমলের মাটির কিছু জিনিস,  ভাঙ্গা টুকরো থেকে উরসালিম নামে একটি শহরের কথা জানা যায়,  যারা আরেক নাম সালেম বা সালেম ( সন্ধ্যা তারার ত দেবতা)    উরসালিম শব্দের অর্থ হতে পারে  " সালেমপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে "। 

এতক্ষণ সে সময়কার সাম্রাজ্য, আয়তন, বর্গ, সভ্যতা ও ঐতিহাসিক কিছু কথা বলা হল। আবার জেরুজালেমে ফিরে আসি, গিহন ঝরনাকে ঘিরে একটি জনবসতি গড়ে উঠতে শুরু করে: কেননা সম্প্রদায়ের লোকজন পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে একটি খাল কেটে তাদের নগর দুর্গের প্রাচীরের ভেতর পানি নিয়ে যায়।   একটি ভূগর্ভস্থ সুরক্ষিত পথে তারা পানি আনা নেওয়া করত। সাম্প্রতিক  প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে জানা যায় একটি সুউচ্চ টাওয়ার থেকে ঝর্ণাটি পাহারা দেওয়া হতো, এটি ছিল ২৩ ফুট পুরু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা।  প্রাচীরটি নির্মাণে তিন টনি পাথর ব্যবহার করা হয়েছে।  উপাসনার ঘর হিসেবে ও ব্যবহার করা হতো টাওয়ারটি।  সেখানে ঝরনার স্বর্গীয় পবিত্রতা উদযাপন করতে অধিবাসীরা।  

কেনানের পুরোহিত রাজারা সুউচ্চ দুর্গের মত অনেক মন্দির (টাওয়ার টেম্পল) নির্মাণ করেন। পাহাড়ের উপর দিকে নগর প্রতিরক্ষা দেয়ালের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। এগুলোই নগরীর প্রাচীনতম অংশ। জেরুজালেমে অন্যদের চেয়ে অনেক দক্ষ নির্মাতা হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে কেনানরা। কারো প্রায় দুই হাজার বছর পর সেখানে সম্রাট হেরোডের আগমন ঘটে।

খ্রিস্টপূর্ব ১৪৫৮ সালে মিশরীয়দের ফিলিস্তিন দখল করার পর জেরুজালেমে  তাদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। পাশের শহর গাজা ও জাফার সুরক্ষা দিতে মিশরের সেনাবাহিনী। খ্রিস্টপূর্ব ১৩৫০ সালে জেরুজালেমের ভীত সন্ত্রস্ত রাজা তার অধিপতি মিশরের নতুন ফারাও আখেনাতেনের কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন পাঠান। আশপাশের রাজ্য ও যাযাবর দুর্বৃত্তদের হাত থেকে বাঁচতে ৫০ জন তীরন্দাজ হলেও পাঠানোর আবেদন করেন তিনি। রাজা আবদি-হেপা তার নগর দুর্গটিকে বলতেন, 'জেরুজালেম ভূমির রাজধানী'। যা থেকে নাম হয় বেইত শালমানি (মঙ্গল গৃহ)। সম্ভবত শালমান থেকে নগরীর নাম শালেম হয়েছে।

দক্ষিণে ছিল মিশরীয়দের প্রতাপ। উত্তরে হিত্তিতে (বর্তমানে তুরস্ক) এবং উত্তর- পশ্চিমে ছিল মায়সিনিয়ান গ্রিকরা, ট্রোজান যুদ্ধে যারা লড়াই করেছিল। এদের মধ্যেই কিছুটা হলেও প্রভাবশালী ছিলেন আবদি-হেপা।

রাজার নামের প্রথম অংশটি ছিল পশ্চিম সেমিটিক-মধ্যপ্রাচ্যের  বহু জাতি ও ভাষা হলো সেমিটিস,সম্ভবত শেম (হযরত নুহের ছেলে)থেকে তা এসেছে। তাই,উত্তর-পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের যে কোন অঞ্চল থেকে আবদি-হেপার আগমন ঘটে থাকতে পারে। তার আবেদনটি ফারাওদের আর্কাইভে পাওয়া যায়।  

জেরুজালেমের ইতিহাস, দাউদের বিশ্ব, পর্ব এক. The History of jerusalem.


আবেদনটি ছিলো এরকমঃ 

আতঙ্কতাড়িত ও মুসাহেবী'তেপূর্ণ আবেদনটি এখন পর্যন্ত জ্ঞাত কোন জেরুজালেমবাসীর প্রথম পাঠানো বার্তা। 

আমি ৭ ও ৭ রাজার পায়ে পড়ি। মিলকিলি ও সুয়ারদাতিরা এই দেশের বিরুদ্ধে কী করেছে তা বলছি- তারা গিজারের সৈন্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছে.... রাজার আইনের বিরুদ্ধে.....।  হ্যাবিরুরা ( যাযাবর দুর্বৃত্ত) রাজার ভূমি দখল করে নিয়েছে। এবং জেরুজালেমের অধীনে থাকা একটি শহর দখল করে নিয়েছে কিল্টুর লোকেরা। রাজা  দয়া করে আপনার দাস আবদি-হেপার কথা শুনুন এবং তীরান্দাজ পাঠান।  

এরপর কী হলো তার কিছু জানিনা।  কিন্তু এই অবরুদ্ধ রাজার ভাগ্যে যা কিছুই ঘটুক না কেন,  এর এক'শ বছর পর জেরুজালেমবাসী গিহণ ঝর্ণাকে ঘিরে ওফেল পাহাড়ের উপর খাড়া স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে,  যেগুলো আজও টিকে আছে।  যা ছিল একটি নগর দুর্গ বা শামেল টেম্পল এর ভিত্তি।  শক্তিশালী প্রতিরক্ষা দেয়াল,  সুউচ্চ টাওয়ার এবং সারি সারি ঘরগুলো ছিল যায়ন নামে পরিচিত কেনানদের নগর দুর্গের অংশ।  রাজা দাউদ পড়ে এগুলো দখল করেছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ১৩ শতকের দিকে জেবুসি নামে একটি সম্প্রদায় জেরুজালেম দখল করে। কিন্তু এজিয়ান অঞ্চলের তথাকথিত সাগর মানবদের আগমনের ফলে পুরোনো ভূমধ্যসাগরীয় বিশ্বটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।  হানাদারদের আক্রমণ এবং অভিবাসনের ফলে সাম্রাজ্যগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। হিত্তিদের পতন ঘটে,  রহস্যজনকভাবে ধ্বংস হয়ে যায় মায়সিনীয়রা। মিশরের অবস্থা নড়ে-ভরে হয়ে ওঠে এ সময় আগমন ঘটে হিব্রু নামে পরিচিত এক জাতি গোষ্ঠীর।  




নোট-

এ সময় মিশরের ফারাওয়া ক্যানান শাসন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা করতে পেরেছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। তারা মাটির তৈরি প্রতীকগুলো তাদের শত্রুকে অভিশাপ দেওয়া অথবা নিজেদের মনভাব প্রকাশের জন্য ব্যবহার করে থাকতে পারে।  উদ্ধার করা মাটির জিনিসপত্রের ভাঙ্গা অংশ নিয়ে বিভিন্ন মতবাদ বহুবার পরিবর্তিত হয়েছে।  এতে বুঝা যায় প্রত্নতত্ত্বকে  কিভাবে বিজ্ঞানের মত বহুভাবে  ব্যখ্যা করা যেতে পারে।  

দীর্ঘদিন ধরে মনে করা হতো মিশরীয়রা তাদের নামের জায়গাগুলোকে অভিশপ্ত করার জন্য এসব মাটির পাত্র বা মূর্তি ভেঙ্গে রাখত।  তাই এগুলোকে বলা হতো অভিশাপ-বাণী।  


জেরুজালেমের ইতিহাস।  
দাউদের বিশ্ব 
পর্ব ০১ 


চলবে.... 







Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url